নেপাল ভ্রমণ গাইড | কাঠমান্ডুর সম্পূর্ণ ভ্রমণ নির্দেশিকা

Best Fly Tours and Travels
0

🏔️ নেপাল ভ্রমণ গাইড

হিমালয়ের কন্যা - কাঠমান্ডুর সম্পূর্ণ ভ্রমণ নির্দেশিকা

🌟 স্বাগতম নেপালে

সার্কের সদস্যদের মধ্যে ভূমিবেষ্টিত দেশগুলোর একটি হলো নেপাল। নেপাল বিখ্যাত হিমালয়ের সৌন্দর্যের দরজা হিসাবে কিন্তু শুধু হিমালয় বাদেও নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু বসে আছে আরও নানারকম দেখার মতো স্থান নিয়ে।

🏛️ কাঠমান্ডুর দর্শনীয় স্থান

কাঠমান্ডু নেপালের রাজধানী ও বৃহত্তম মহানগর যেখানে বাস করছে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। নেপালে ঘুরতে হলে কাঠমান্ডুতে এসেই প্রথম ধর্না দিতে হবে।

🕉️ পশুপতিনাথ মন্দির

হিন্দুদের পবিত্র ও নামকরা মন্দিরগুলোর মধ্যে নেপালের পশুপতিনাথ মন্দির সবচেয়ে বিখ্যাত। পশুপতিনাথ গড়ে উঠেছে শিবের সেবার জন্য এবং নেপাল ছাড়াও বছরে ভারত থেকে অজস্র মানুষ এখানে শিবের পূজা করবার জন্য ছুটে আসেন।

🐒 স্বয়ম্ভূনাথ স্তুপ

নেপালের বিখ্যাত বৌদ্ধমন্দিরগুলোর মধ্যে স্বয়ম্ভূনাথ থাকবে ১ থেকে তিনের মধ্যে। এটি কাঠমান্ডু শহরের পশ্চিমে পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত যেখানে যেতে হলে পাড়ি দিতে হবে গুণে গুণে ৩৬৫ টি পাথরের তৈরি সিঁড়ি।

🏛️ বৌদ্ধনাথ স্তুপ

থামেল থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বৌদ্ধ এর স্তুপা নেপাল পর্যটকদের অবশ্য দ্রষ্টব্য জায়গাগুলোর একটি। এটি এশিয়ার সবচেয়ে বড় স্তুপাগুলোর একটি।

🧘 কোপান মনেস্ট্রি

কোপান মনেস্ট্রি কাঠমান্ডুর একটি লুকায়িত হীরার মতো একটি জায়গা। এখানে টিবেতান সাধুরা আসে মেডিটেশন করবার জন্য। কোপান মনেস্ট্রি থেকে কাঠমান্ডু শহর পুরোটার ১৮০ ডিগ্রী ভিউ পাওয়া সম্ভব।

🏰 ঐতিহাসিক স্থানসমূহ

কাঠমান্ডু দরবার স্কয়ার

কাঠমান্ডুর প্রাচীন দিকটি থামেলের দক্ষিণে, বসন্তপুরে অবস্থিত দরবার স্কয়ারকে ঘিরে গড়ে উঠেছে। উনিশ শতক পর্যন্ত নেপালের রাজা ও তার পরিবারের সদস্যগণ এখানেই বসবাস করতেন। জায়গাটি এতটাই বনেদি এবং ঐতিহ্যের সাক্ষী যে ১৯৭৯ সালে ইউনেস্কো একে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে ঘোষণা করে।

🛍️ থামেল

থামেল হলো কাঠমান্ডুর পর্যটকদের প্রাণকেন্দ্র। হাজার হাজার হোটেল, সুভেনিরের দোকান, হাইকিং এর দোকান, রেস্টুরেন্ট, বার এখানে বসে আছে প্রাণচাঞ্চল্য কি জিনিস তার আভাস দিতে।

🌸 গার্ডেন অফ ড্রিমস

গার্ডেন অফ ড্রিমস বা স্বপ্নের বাগান অবস্থিত কাঠমান্ডুর কায়সার মহলে। এটি একটি নিও ক্লাসিকাল বাগান। বাগানটি তৈরি করা হয় ১৯২০ সালে এবং এর ডিজাইন বর্তমান আধুনিক সমস্ত ইউরোপিয়ান বাগানের সাথে মিলে যায়।

📅 কাঠমান্ডু যাওয়ার উপযুক্ত সময়

অক্টোবর ও নভেম্বর হলো কাঠমান্ডু ঘুরবার জন্য উপযুক্ত সময়। এ সময় আবহাওয়া শুষ্ক কিন্তু ঠাণ্ডা অন্য সময়ের থেকে কম থাকে শীতের শুরু বলে। আকাশ পরিচ্ছন্ন থাকে বলে ঘুরে আরাম পাওয়া যায় এবং ট্রেকিং এর প্রস্তুতি ভাল নেওয়া যায়।

এড়িয়ে চলুন: সেপ্টেম্বরে কাঠমান্ডু ঘুরতে না যাওয়া ভাল কারণ তখন বর্ষার জন্য নানারকম অসুবিধা হতে পারে।

বিকল্প সময়: ভিড় পছন্দ না করলে বা সিজনের পরে কম খরচে ভ্রমণ করতে চাইলে মার্চ থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি বা সেপ্টেম্বরের মাঝের টুকু ভাল সময়।

✈️ কিভাবে যাবেন

বিমানে

বাংলাদেশ থেকে নেপালে বিমানযোগে যাওয়া যায় এবং কাঠমান্ডুতে যেতে হলে সেখানকার ত্রিভুবন এয়ারপোর্ট-এর টিকেট কাটতে হবে। খরচ যাওয়া আসার টিকেট নিয়ে ৩২ হাজার টাকা থেকে ৩৬ হাজার টাকার মতো পরবে।

সড়কপথে

বাই রোডে নেপাল যেতে হলে খরচ কমে যাবে অনেকটা। সেক্ষেত্রে ভারতের ট্রানজিট ভিসা নিতে হবে যেখানে পোর্টের নাম দিতে হবে চ্যাংরাবান্ধা বা রানীগঞ্জ। এতে খরচ পরবে প্রায় ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকার মতো।

🏨 কোথায় থাকবেন

থাকতে হলে থামেলের চেয়ে উপযুক্ত স্থান আর দ্বিতীয়টি নেই কারণ পুরো থামেলের গলি ঘুপচিতে অসংখ্য হোটেল/ব্যাকপ্যাকার হোস্টেল রয়েছে।

  • বাজেট হোটেল: ১০০০ থেকে ১৮০০ রুপির মধ্যে ভাল ডাবল রুম
  • সিঙ্গেল রুম: ৪০০ রুপিতে সিঙ্গেল রুমের হোটেল
  • ডিলাক্স রুম: ৩০০০ রুপি বা তার বেশি হলে খাবার সহ অনেক ভাল হোটেল

টিপস: আগে থেকে বুকিং না দিয়ে বরং পায়ে হেঁটে কয়েকটি হোটেল ঘুরে যাচাই বাছাই করলে সস্তায় ভাল হোটেল পাওয়া সম্ভব।

🍽️ কি খাবেন

নেপালের লোকাল খাবার হিসাবে তারা ভাতের থালিকেই প্রাধান্য দেয়। তাই কাঠমান্ডুর যেখানেই যাওয়া হোক না কেন ভাত না খেয়ে থাকা অসম্ভব।

🍛 ঐতিহ্যবাহী থালি

ভাতের সাথে মাছ, মুরগি, সালাদ, রায়তা, শাক ও পাঁপড় থালিতে থাকে। দাম: ১৫০-৩০০ রুপি

🥟 মোমো

নেপাল শীতপ্রধান দেশ বলে সেখানে মোমোর প্রচলন আছে। থামেল ও কাঠমান্ডুর অন্যান্য জায়গায় অসংখ্য মোমোর দোকান আছে।

🍵 চা ও কফি

নানা স্বাদের নানা রঙের চা ও কফি। ফুলের পাপড়ি থেকেও চা তৈরি করে তারা বিক্রি করে রাস্তার মোড়ে মোড়ে।

🛒 কেনাকাটা

থামেল হলো কাঠমান্ডু থেকে কেনাকাটা করবার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান। কারণ এখানে এত বেশি দোকান ও তার মনোহর সামগ্রী যে তা কাঠমান্ডুর অন্য কোথাও দেখতে পাওয়া যায় না।

কি কিনবেন:

  • গোর্খা ছুড়ি
  • সিঙ্গিং বোল
  • পশ্মিনা চাদর
  • মান্ডালা ওয়াল পেইন্ট
  • ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প

সতর্কতা: টুরিস্ট এলাকা হিসাবে এখানে অবশ্যই দাম অস্বাভাবিক রকমের বেশি থাকবে। ভাল দামাদামি করুন।

💰 কাঠমান্ডু ভ্রমণ খরচ

দলবল বা দুই তিনজন মিলে গেলে খরচ অনেকটা কমে যায় কাঠমান্ডু ভ্রমণের ক্ষেত্রে।

আনুমানিক খরচ (জনপ্রতি):

  • বিমানে: ৩০-৩২ হাজার টাকা (২-৩ দিন)
  • সড়কপথে: ২০-২৪ হাজার টাকা (৬-১০ হাজার টাকা সাশ্রয়)
  • খাবার: ১৫০-৩০০ রুপি প্রতি থালি
  • থাকা: ৪০০-১৮০০ রুপি প্রতি রাত

সুবিধা: সার্কভুক্ত দেশের নাগরিকদের জন্য মন্দিরগুলোর টিকেট বিদেশিদের থেকে প্রায় এক তৃতীয়াংশ কম দামে পাওয়া যায়।

💡 কাঠমান্ডু ভ্রমণ টিপস

✈️ বিমান ভ্রমণ

বিমানে যাত্রার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে কাঠমান্ডু যাবার সময় বোর্ডিং অফিসারকে বলে যদি বিমানের বা সারির সিট নেওয়া যায় তাহলে কাঠমান্ডুর এয়ারপোর্টে নামার আগেই হিমালয়ের আইসপিক বিমান থেকে দেখতে পারবেন।

🙏 সাংস্কৃতিক শিষ্টাচার

নেপালিরা ভীষণভাবে অতিথিপরায়ণ ও সাহায্যকারী। যেহেতু তারা হিন্দুরাজ্য তাই সেখানে গিয়ে খাবার দাবার বা তাদের মন্দির ঘুরবার সময় ধর্মীয় রীতিনীতির সাথে যথাসম্ভব সম্মান দেখান।

💱 অর্থ বিনিময়

টাকা এয়ারপোর্ট থেকে না ভাঙিয়ে এয়ারপোর্টের বাইরে মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ভাঙ্গালে রেট বেশি পাওয়া যায়। তবে মোবাইল সিমটি এয়ারপোর্ট থেকে কেনাই ভাল।

🏨 হোটেল নির্বাচন

যেহেতু নেপাল ঠাণ্ডার দেশ তাই হোটেল নেবার আগে গরম পানির ব্যবস্থা কেমন তা ভালো ভাবে জেনে হোটেল নেওয়া ভাল।

📋 ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

অন এরাইভাল ভিসার জন্যে পাসপোর্ট, পাসপোর্টের ফটোকপি, রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি, রিটার্ন টিকেট ও হোটেল বুকিং তথ্য, ডলার এনডোর্সমেন্ট, চাকরিজীবী হলে NOC এবং স্টুডেন্ট হলে আইডি লাগে।

📞 জরুরি ফোন নাম্বার

🚨 জরুরি সেবা

  • পুলিশ (ইমারজেন্সি): ১০০
  • টুরিস্ট পুলিশ: ৪২৪৭০৪১
  • এম্বুলেন্স: ১০২
  • এম্বুলেন্স (রেড ক্রস): ৪২২৮০৯৪

🏢 সরকারি সেবা

  • ডিপার্টমেন্ট অফ ইমিগ্রেশন: ৪২২৩৫০৯/৪২২৪৫৩
  • নাইট ট্যাক্সি: ৪২২৪৩৭৪

📍 আশেপাশের অন্যান্য দর্শনীয় স্থান

আসান বাজার

আসান টোলে বা আসান বাজার হলো নেপালের তাজা শাকসবজি ও ফলের বাজার। বাড়িতে বানানো স্থানীয় পানীয় রাকশি থেকে শুরু করে নানারকম মশলা, স্থানীয় নাম না জানা ফল সমস্ত কিছু এখানে পাওয়া যায়। লোকাল জিনিস ও মানুষদের কাছে থেকে দেখবার জন্য আসান টোলে অনন্য মাত্রা যোগ করতে সক্ষম।

সিংহ দরবার

নব্য-ধ্রুপদী, পেলেডিয়ান এবং ইউরোপীয় স্থাপত্য শৈলী মিশেলে তৈরি সিংহ দরবার বা সিংহ প্রাসাদ কাঠমাণ্ডুর মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত রাণা বংশের একটি প্রাসাদ।

পাটান ও ভক্তপুর

কাঠমান্ডু ভ্যালীর কাছাকাছি আরও দুটি দরবার স্কয়ারের মতো ঐতিহাসিক গুরুত্বের নিদর্শন রয়েছে পাটানে এবং ভক্তপুরে। ভূমিকম্প এই দুইটি জায়গার ক্ষতি করলেও তা দরবার স্কয়ারের মতো মারাত্মক নয়।

⚠️ গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা

ভূমিকম্পের প্রভাব

২০১৫ সালের তীব্র মাত্রার ভূমিকম্পে রাজপ্রাসাদ সহ অনেক মন্দিরের দক্ষিণ দিক ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সংস্কারের কাজ চলমান এবং এর বর্তমানে অবশিষ্ট অংশ দেখেও এর প্রাক্তন সৌন্দর্যের আন্দাজ করা সম্ভব। আশার কথা হচ্ছে স্বয়ম্ভূনাথ মন্দিরের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি।


📞 আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

নেপাল ভ্রমণের জন্য আজই বুকিং দিন!

📱 ফোন নম্বর

হটলাইন: ০১৬২৪-৮৬০৪৩১

বিকল্প: ০১৬২৪-৮৬০৪৩২

অফিস: ০১৬২৪-৮৬০৪৩৩

হোয়াটসঅ্যাপ: +৮৮০১৬২৪৮০৪৩৪

✉️ ইমেইল ও ঠিকানা

ইমেইল: bestflytourstravels@gmail.com

অফিস: বেস্ট ফ্লাই ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস

সময়: সকাল ৯টা - রাত ৯টা

Tags

Post a Comment

0 Comments
Post a Comment (0)